হরিরামপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী এডভোকেট এ কে এম সিদ্দিক বিশ্বাস
১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৫ পিএম | আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৪ পিএম
বাঙালির রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাস বাঙালি জাতির জন্য এক অবিস্মরণীয় মাস। এই মাসেই বাঙালি জাতির ঐতিহাসিক বিজয়ের মাস। এই মাসের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ হন তৎকালীন বুদ্ধিজীবী এডভোকেট এ কে এম সিদ্দিক বিশ্বাস। যার পুরো নাম আবুল খায়ের মোহাম্মদ সিদ্দিক বিশ্বাস। ডাক নাম হেনা ছিল হেনা মিয়া।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার সোনাকান্দা গ্রামে ১৯২৫ খ্রি. জন্ম গ্রহণ করেন এ কে এম সিদ্দিক। তাঁর বাবা নাম আবদুল লতিফ বিশ্বাস। তিনিও ছিলেন খ্যাতিমান আইনজীবী ও কৃষক প্রজা পার্টির অন্যতম নেতা ছিলেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি রাজস্বমন্ত্রী (১৯৫৪), কৃষি ও খাদ্যমন্ত্রী (১৯৫৫-১৯৫৬) ছিলেন। মা উম্মে সাহারা খাতুন ছিলেন একজন আটপৌঢ়ে গৃহিণী। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সিদ্দিক বিশ্বাস ছিলেন বড়। বার ও হাইকোর্টের আইনজীবী। তিনি ১৯৬৯ সন হতে ১৯৭০ পর্যন্ত ঢাকা বারের সেক্রেটারী ছিলেন। প্রগতিশীল চিন্তাধারায় বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি ভাষানী ন্যাপের ঢাকা জেলা কমিটির সেক্রেটারীও ছিলেন।
একাত্তরের ১৪ ডিসেম্বর। থাকার চারদিক সুনসান। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এমনিতেই মানুষের চলাচল নেই বললেই চলে। তার ওপর শীতের কারণে সন্ধ্যার পরপরই সবাই ঘরে ঢুকে পড়েন। মাঝেমধ্যে ডেমড়ার দিক থেকে ভেসে আসে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর শেলিংয়ের শব্দ। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণ নিয়ে চারদিকে গুঞ্জন।
শহীদ সিদ্দিক ১৪ ডিসেম্বর ঢাকার চণ্ডীচরণ বোস স্টিটের বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান, ভাই-বোন মিলে টেলিভিশনে খবর দেখছিলেন। রাত আটটার দিকে দোতলা বাড়ির ফটকের সামনে বদর বাহিনীর একটি গাড়ি এসে থামে। ঘাতক বাহিনীর সাত-আটজন সদস্য বাড়ির দোতলায় ঢুকেই সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে আইনজীবী এ কে এম সিদ্দিক বিশ্বাসকে তুলে নিয়ে যায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর আলবদররা। এ ঘটনার পরে ঢাকার বিভিন্ন থানা, হানাদার সেনা ক্যাম্পসহ অনেক জায়গায় খোঁজ করেও স্বজনেরা তাঁর সন্ধান পাননি। ধারণা করা হয় আল বদর বাহিনী তাকে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে। তিনি ওই সময় পাকিস্তানি ঘাতক বাহিনী ও পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কড়া সমালোচনা করতেন।
মুক্তিযুদ্ধেও সহযোগিতা তিনি ব্যাপক করেছেন। সে কারণেই পরাজয়ের অব্যবহিত আগের নীলনকশা অনুসারে খ্যাতিমান এই আইনজীবীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করে আলবদররা।
শহীদ এ কে এম সিদ্দিক বিশ্বাসের ভাতিজা উপজেলার গালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিক বিশ্বাস স্মতিচারণ করে বলেন, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। এ দিনেই শহীদ হয়েছেন আমার চাচা এড. এ কে এম সিদ্দিক বিশ্বাস। যা হয়তো হরিরামপুরের এ প্রজন্মের সন্তানেরা তাঁর নামই শোনেননি। যারা জানেন, তাদেরও অনেকেই হয়তো ভুলে গেছেন জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানকে। তিনি শুধু আমাদের বিশ্বাস পরিবারেরই নয়, গোটা হরিরামপুর তথা মানিকগঞ্জের গর্ব ও অহংকার। আজ। এই দিনে আমি তাকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ও তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
যারা নির্বাচনী অপরাধ করেছেন তাদের বিচার হওয়া উচিত.রাজশাহীতে বদিউল আলম মজুমদার
ট্রাকচাপায় ফায়ার ফাইটার নিহতের ঘটনায় মামলা
সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের সময় বাড়ল
মেহেরপুর জেলা বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দকে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির লক্ষ্যে কেএমপিকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে; কেএমপি কমিশনার
মির্জাপুরে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত
বাগেরহাটে ষড়যন্দ্রমূলক মিথ্যা মামলা ও হুমকির প্রতিবাদে প্রবাসীর সংবাদ সম্মেলন
পদবঞ্চিতদের আড়ালে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, জবি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাহীনতায় বিবৃতি
টিকেটে ছাড়াই তারকা খেলোয়াড়দের খেলা দেখার সুযোগ পাবে সিলেটবাসী
ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে শ্রম মন্ত্রণালয়ের ২ কমিটি গঠন
কনস্টাসকে ধাক্কা দেওয়ার শাস্তি পেলেন কোহলি
আটঘরিয়ায় ফসলী জমিতে চলছে পুকুর খনন আশঙ্কাজনক হারে কমছে জমি
পাইকগাছায় অসুস্থ গরীবদের জন্য জিয়া প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সেন্টারের দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প
কেশবপুর উপজেলা মৎসলীগের সভাপতি ও সুফলাকাঠী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম মুনজুর রহমান ডিবি পুলিশের হাতে আটক
মাদারীপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মাদ্রাসার শিক্ষকের প্রান গেল
বিদেশি নাগরিকদের বৈধতা অর্জনের সময়সীমা বেঁধে দিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
কুলাউড়ায় মোবাইল চুরির অপবাদ সইতে না পেরে যুবকের আত্মহত্যা
মাদারীপুরে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের মানববন্ধন
তারাকান্দায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত-৬
আওয়ামীলীগ লাশের ওপর নৃত্য করে ফ্যাসিস্ট ইতিহাস তৈরি করেছিল : ড. রেজাউল করিম